DARUNNAZAT SIDDIKIA KAMIL MADRASAH
DEMRA,DHAKA. EIIN : 107906
সাম্প্রতিক খবর

 gv`ivmv cÖwZôvi BwZnvm 

ঢাকা মেট্রোপলিটন এরিয়ায় ডেমরা থানাধীন সারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের শুকুরসি গোরস্থান সংলগ্ন ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ রোডের পশ্চিম পাশেডি.এন্ড.ডি. প্রজেক্টের মধ্যে ছায়া ঢাকা পাখি ডাকা মনোরম পরিবেশে অবস্থিত দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐতিহ্যবাহী দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা। স্থানীয় কয়েক গ্রামবাসীর যৌথ উদ্যোগে ভারত বিভাগের এক বছর পূর্বে ১৯৪৬ ঈসায়ী সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল শুকুরসি গোরস্থান।

১৯৪৬ থেকে ৮৬দীর্ঘ ৪০ বছর পর মহান রাব্বুল আলামীনের অশেষ রহমতে কবরবাসীর জন্যে দুআ মাহফিল করার উদ্দেশে এ কবরস্থানটির পাশে তৎকালীন একটি ধানক্ষেতে শুভাগমন ঘটে ছারছীনা শরীফের পীরে কামেল শাহ সূফী আবু জাফর মুহাম্মাদ সালেহ র. এর। মাহফিলের পর কবরবাসীদের জন্যে দুআর ধারা অব্যাহত রাখার মহান লক্ষ্যে গোরস্থানের পাশে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করলেন তিনি। এর জন্যে দুআও করলেন মহান আল্লাহর আলীশান দরবারে।

প্রায় জনমানব শূন্য এ এলাকাটিতে তখন বিরাজ করছিল এক ভীতিকর পরিবেশ। বৃষ্টির দিনে পানিতে প্রায় ডুবে যেত সবকিছু। চারদিকে ছিল বিশাল-বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। দিনের বেলায়ই চোখে পড়তো নানা ধরনের হিং¯্র প্রাণীআর মরা মানুষের দেহ নিয়ে শিয়াল-কুকুরের টানা-হেঁচড়া। সন্ধ্যায় ভেসে আসতো দলবদ্ধ শৃগালের হুক্কাহুয়া ডাক। চোর-ডাকাত আর দুর্বৃত্তদের অনেকটা অভয়াশ্রম ছিল এ এলাকা। রাতে তো দূরের কথামানুষজন সন্ধ্যা বেলায়ও এ এলাকায় চলাচল করতে ভয় পেতো। মেইন রোডের গলাকাটা পুল (বর্তমানে মাদরাসা ব্রিজ) এখনো সে বীভৎস পরিবেশের নীরব সাক্ষী।

১৯৮৮ সনে পার্শ্ববর্তী করিম জুট মিলস লিমিটেড জামে মাসজিদের পেশ ইমাম আলহাজ্জ মাওলানা রুহুল আমীন সাহেবের সাথে এ এলাকার ১৮ জন পূণ্যবান ব্যক্তি পবিত্র হজ্জব্রত পালনের উদ্দেশে গমন করেন পবিত্র মক্কাতুল মুকাররমায়। হজ্জ শেষে বাইতুল্লাহর চত্বরে বসে তারা সম্মিলিতভাবে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেনদেশে ফিরে একটি মাদরাসা স্থাপন করবেন। পরবর্তীতে স্থানীয় সান্দিরা বালুঘাটে কবরস্থান সংশ্লিষ্ট এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় শুকুরসী গোরস্থানের পাশে দারুল ফেরদাউস’ নামে একটি ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার। সিদ্ধান্ত অনুসারে ১৯৮৯ সনে সেপ্টেম্বর মাসের কোন এক তারিখে এখানে একটি মাহফিলে ফুরফুরা শরীফের পীর আলহাজ্জ হযরত মাওলানা আব্দুল কাহহার সিদ্দীকী আল কুরাইশী র. এর মুবারক হাতে মরহুম হাজী আনসার আলী সাহেবের দান করা জমিতে অর্থাৎবর্তমান মাদরাসা মাঠের ঠিক মাঝামাঝি জায়গায় জলাবদ্ধ ধানক্ষেতের পানির মধ্যে একটি খুঁটি পুতে ভিত্তি স্থাপন করা হয় এ মাদরাসার। ফুরফুরার হুজুর র. দারুল ফেরদাউস’ নামের পরিবর্তে এর নাম রাখেন দারুননাজাত। হুজুর বলেন, “আগেতো নাজাত অর্জন করেনপরে জান্নাতে যান।

১৯৯০ সনের জানুয়ারি মাসে পার্শ্ববর্তী হুসাইনিয়া জামে মাসজিদে পরিচালিত মক্তবটি এখানে এনে মাসজিদের ইমাম আলহাজ্জ মৌলভী নূরুল হক সাহেব কর্তৃক প্রথম শুরু হয় মাদরাসার একাডেমিক কার্যক্রম। ১৯৯০-১৯৯১ দুই বছর চলে ইবতেদায়ী স্তর। এর মধ্যে তিনজন ইবতেদায়ী প্রধান পরিবর্তন হন।

আল্লাহ তাআলার এক ইশারায় এবং তাঁর অশেষ মেহেরবানীতে ১৯৯১ সনের ১৬ ডিসেম্বর তারিখে ইবতেদায়ী প্রধান হিসেবে ৭০০ টাকা বেতনে দারুননাজাতের খেদমতে শরীক হন দারুননাজাতের বর্তমান সুযোগ্য অধ্যক্ষ মহোদয় আলহাজ্জ মাও. আ.খ.ম. আবুবকরসিদ্দীক মা.জি.আ.। আল্লাহর রহমতের ওপর ভরসা করে তিনি ১৯৯২ সনে দশম শ্রেণিতে একজননবম শ্রেণিতে একজনঅষ্টম শ্রেণিতে তিনজনসপ্তম শ্রেণিতে ছয়জন ছাত্র নিয়ে শুরু করেন এর দাখিল স্তরের কার্যক্রম। আল্লাহর অশেষ রহমতসর্বসাধারণের আস্থা ও সহযোগিতায় মাদরাসাটি ১৯৯৪ সনে আলিম১৯৯৬ সনে ফাযিল এবং ২০০৪ সনে কামিল পর্যায়ে উন্নীত হয়। লাভ হয় মাদরাসা বোর্ডের একাডেমিক অনুমতি ও মঞ্জুরী এবং ফাযিল পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মচারিদের বেতন-ভাতাদির সরকারি অংশ। ২০১০ সালে এখানে আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ এবং আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ- এ দুটো বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। এ যেন অবিশ্বাস্য স্বপ্নের এক সফল বাস্তবায়ন।